অবৈধভাবে পুকুর ভরাট করায় ৫০ হাজার টাকা জরিমানা

নিজস্ব প্রতিবেদক : অবৈধভাবে পুকুর, জলাশয় ভরাট বন্ধে জিরোটলারেন্স ঘোষণা করেছে রাজশাহী জেলা প্রশাসন। এরই ধারাবাহিকতায় রাজশাহী মহানগরীর মেহেরচণ্ডী এলাকায় অবৈধভাবে পুকুর ভরাট করায় আরিফুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত। গত সোমবার (৮ এপ্রিল) দিবাগত রাত ১২টায় নগরীর মেহেরচণ্ডী এলাকায় এই অভিযান চালানো হয়। এ সময় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাকিব হাছান খান।
রাজশাহী মহানগরীতে দেড় একর আয়তনের একটি পুকুর এখনো আস্ত রয়েছে। পুকুরটি রাজশাহী মহানগরীর চন্দ্রিমা থানার মেহেরচণ্ডী মৌজায়। আরএস খতিয়ান নম্বর ৪৮৮ এবং দাগ নম্বর ২৪৭৮। পরিমাণ ১ দশমিক ৫ একর। পুকুরের শ্রেণি ‘ভিটা’ বলে মালিকপক্ষ ভরাট করছিল। গত ২৫ মার্চ রাত থেকে প্রতি রাতে পুকুরটি ভরাট করা হচ্ছিল। অথচ পুকুরটি এখনো ৩ বছরের জন্য এক ব্যক্তির কাছে ইজারা দেওয়া রয়েছে। ইজারাদার প্রথম দিকে থানায় অভিযোগ করেছিলেন। পরে তাদের সিংহভাগ ক্ষতিপূরণ দেওয়ায় থেমে গেছে।
জানা গেছে, পরিবেশ সংরক্ষণ আইন (সংশোধিত) ২০১০ অনুযায়ী, জলাধার হিসেবে চিহ্নিত জায়গা ভরাট বা অন্য কোনোভাবে শ্রেণি পরিবর্তন করা যাবে না। তবে অপরিহার্য জাতীয় স্বার্থে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নিয়ে জলাধার-সম্পর্কিত বিধিনিষেধ শিথিল করা যেতে পারে। অন্যদিকে হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী জলাধার সংরক্ষণ আইন ২০০০-এর বিধান অনুসারে ব্যক্তিগত পুকুরও জলাধারের সংজ্ঞায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় তা ভরাট করা যাবে না। অথচ পুকুর ভরাটকারীরা ‘ডিসি ও এসপি’র নাম ভাঙিয়ে পুকুরটি ভরাট করছিলেন।
এ বিষয়ে দৈনিক ইত্তেফাকে ‘রাজশাহীতে পুকুর ভরাট চলছেই’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। সেই দিন রাতেই প্রশাসনের পক্ষ থেকেই পুকুর ভরাট বন্ধে অভিযান চালানো হয়। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে পরিচালিত এই অভিযানে অংশ নেন রাজশাহী পরিবেশ অধিপ্তরের পরিদর্শন নীল রতন সরকার ও মহানগর পুলিশের পাঁচ সদস্য। ম্যাজিস্ট্রেট সাকিব হাছান খান জানান, জরিমানার টাকা সঙ্গে সঙ্গে আদায় করা হয়েছে এবং তাদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, পরবর্তী সময় এই পুকুর ভরাট করা হলে তাদের গাড়ি জব্দ করাসহ প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রাজশাহীর জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ আগের দিন রাতে মুঠোফোনে পুকুর ভরাট প্রসঙ্গে বলেন, ম্যাজিস্ট্রেট পাঠিয়ে পুকুর ভরাট বন্ধ করার ব্যবস্থা করবেন। মঙ্গলবার তিনি বলেন, অবৈধ পুকুর ভরাট বন্ধে রাজশাহী জেলা প্রশাসন ‘জিরো টলারেন্স’ অবস্থান নিয়েছেন।