নগরীতে তিন ভুয়া সেনা সদস্য গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহী মহানগরীর কাদিরগঞ্জ এলাকায় অভিযান চালিয়ে তিন ভুয়া সেনা সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা নিজেদের সেনা সদস্য পরিচয় দিয়ে সেনাবাহিনীতে চাকরি দেওয়া কথা বলে টাকা আত্মসাৎকারী প্রতারণা চক্রের সদস্য। গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে ৯টি ভুয়া নিয়োগপত্র, সেনাবাহিনীতে যোগদানের পূর্বে মেডিকেলের জন্য প্রত্যয়নপত্রের ফটোকপি, আসামির স্বাক্ষরকৃত ফাঁকা চেক, সেনাবাহিনীর নকল পরিচয়পত্র ও নগদ ২০ হাজা টাকা উদ্ধার হয়।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার গোমস্তাপুর থানার পীড়াশন গ্রামের মোঃ রবিউল ইসলামের ছেলে মোঃ রবিন ইসলাম (২২), একই থানার নিমতলা গ্রামের হেফাজ উদ্দিনের ছেলে মোঃ আব্দুল হাকিম (২২) ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর থানার ইসলামপুর গ্রামের হারুন অর রশিদের ছেলে মোঃ আব্দুর রহিম (২৫)।
মহানগর পুলিশের মুখপাত্র মোঃ জামিরুল ইসলাম জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার নাচোল থানার চন্দনা গ্রামের আব্দুল আজিজের দুই ভাই ও শ্যালক বিভিন্ন সময় সেনাবাহিনীর চাকরি জন্য লাইনের দাঁড়ায়। কিন্তু তাদের চাকরি হয়নি। এ সুযোগে আসামিরা তাদের বাড়িতে গিয়ে জানায়, সেনাবাহিনীর বড় অফিসারদের সাথে তাদের পরিচয় আছে। টাকা দিলে চাকরি নিয়ে দিতে পারবে। এসময় আসামি রবিন নিজেকে সেনাবাহিনীর মেজর, আব্দুর রহিম লেঃ কর্নেল এবং হাকিম ক্লার্ক পরিচয় দেয়। এছাড়া রবিনের বাবা-মা বিভিন্ন ব্যক্তিকে সেনাবাহিনীতে চাকরির প্রলোভন দেয় এবং চাকরি না হলে টাকা ফেরত প্রদানের নিশ্চয়তা প্রদান করে। ২০২৩ সালে আসামিদের সঙ্গে আজিজের দুই ভাই ও তার শ্যালকের চাকরির জন্য ২৫ লক্ষ ৭ হাজার টাকার একটি মৌখিক চুক্তি হয়। এসময় আসামি হাকিম তার স্বাক্ষর করা একটি ফাঁকা চেক প্রদান করে। কয়েক দিন পর আসামিরা এসে ঐ তিন জনের চাকরির জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে যায়। পরবর্তীতে ২৩ জুলাই বোয়ালিয়া থানার কাদিরগঞ্জ বর্ণালী মোড়ে আসামিরা আজিজকে তিন জনের চাকরির ভুয়া নিয়োগপত্র প্রদান করে। তখন আজিজ তাদের ১২ লক্ষ প্রদান করে এবং পরে অবশিষ্ট ১৩ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা প্রদান করেন। আজিজের এলাকার যারা চাকরি পেয়েছে তারা প্রশিক্ষণে চলে যায়। কিন্তু তার ভাই ও শ্যালকের নাম না আসায় আসামিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে। তখন আসামিরা তাকে প্রশিক্ষণের তারিখ পরিবর্তন করে পুনরায় নিয়োগপত্র প্রদান করে অতিরিক্ত টাকা দাবি করে এবং ১৭ এপ্রিল রাজশাহীতে আসতে বলে। তাদের এধরনের কার্যক্রম সন্দেহ হলে তারা এলাকায় খোঁজখবর নেয়। খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারে তারা ছাড়াও গ্রামের আরও পাঁচ জনের কাছ থেকে সেনাবাহিনীতে চাকরি দেওয়ার কথা বলে প্রায় ৪০ লক্ষ প্রতারণা ও আত্মসাৎ করেছে। বিষয়টি আব্দুল আজিজ রাজশাহী মহানগর গোয়েন্দা অফিসে মৌখিকভাবে জানায়। উক্ত সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে ১৭ এপ্রিল রাতে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ অভিযান চালিয়ে নগরীর বর্ণালীর মোড় থেকে আসামিদের গ্রেপ্তার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। সহযোগী অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে নগরীর বোয়ালিয়া থানায় মামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার আসামিদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।