পুঠিয়ায় বৃদ্ধার বস্তাবন্দি লাশের হত্যারহস্য উদঘাটন

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বরে থান্দার পাড়ার কবরস্থান থেকে উদ্ধার বস্তাবন্দি লাশের হত্যারহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ। এই হত্যাকাণ্ডের শিকার বেদেনা বেওয়ার (৬০) ছেলের দ্বিতীয় বৌ কনিকা খাতুন পারিবারিক কলহের জেরে শ^াশুড়ীকে হত্যার করেছে বলে আটকের পর তিন আসামি আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। পুঠিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাইদুর রহমান গতকাল বুধবার (১৭ এপ্রিল) এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

পুঠিয়া থানার ওসি জানান, এর আগে নিহতের ছেলের বৌ কনিকা (২৯), নাতনি কথা খাতুন (১৪) ও প্রতিবেশি জুয়েছের ছেলে আকাশ ওরফে বছিরকে (১৬) আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। ওসি জানান, গত ১২ এপ্রিল পুঠিয়ার বানেশ্বর ইউনিয়নের থান্দারপাড়া গ্রামের কবরস্থান থেকে বস্তাবন্দি বৃদ্ধার মরদেহ উদ্বার করা হয়। মৃতের গলায় কাটা জখম ও শরীরে স্থানে জখমের চিহ্ন ছিল। এছাড়া মুখে স্কচটেপ জড়ানো ছিল। লাশ উদ্ধারের পর বৃদ্ধার ছেলে ও পরিবারের সদস্যরা তার পরিচয় শনাক্ত করেন।

এদিকে লাশ উদ্ধারের পর মৃতের ছেলে রিপন আলী পুঠিয়া থানার হত্যা মামলা করেন। পুঠিয়া থানা পুলিশ ও পিবিআই রাজশাহীর যৌথ টিম মামলার ২৪ ঘন্টার মধ্যে হত্যাকাণ্ডে জড়িত নিহত বেদেনার ছেলের দ্বিতীয় বৌ কনিকা, নাতনি কথা খাতুন ও আকাশ ওরফে বছিরকে আটক করা হয়।

তদন্ত ও প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জানতে পারে, বেদেনা বেওয়ার স্বামীর মৃত্যুর পর তিনি স্বামীর ভিটায় ছেলের প্রথম স্ত্রীর ছেলে হিমু ও মেয়ে কথা খাতুনকে নিয়ে থাকতেন। বেদেনা বেওয়া বানেশ্বর বাজারের এক ডাক্তারের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে জীবীকা নির্বাহ করতেন। কিন্তু নিজ ছেলের দ্বিতীয় স্ত্রী কনিকার সাথে বনিবনা না হওয়ায় বেদেনা বেওয়া নিজের মত করে চলতেন।

ওসি আরও জানান, গত ৯ এপ্রিল বেদেনার ছেলের বৌ কনিকা, নাতনি কথা খাতুনের মাধ্যমে বেদেনার ইফতারের সরবতের সাথে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে পান করায়। ঐ সরবত পানের পর বেদেনা ঘুমে বেহুশ হলে কনিকা একাই বেদেনার দুই হাত খাটের সাথে ওড়না দিয়ে বেঁধে মুখে বালিশ চাঁপা দিয়ে হত্যা করে। এরপর প্রতিবেশি জুয়েলের ছেলে আকাশ ওরফে বছিরের সহায়তায় বেদেনার বস্তাবন্দি লাশ রাতের আঁধারে বাড়ির পাশের কবরস্থানে ফেলে দেয়। তিনদিন পর ১২ এপ্রিল পঁচা দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়রা কবরস্থানে গিয়ে বস্তাবন্দী লাশ দেখে পুঠিয়া থানায় খবর দেন। পরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়।

সংশ্লিষ্ট খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button