রাজশাহী চিনিকলের সিবিএ নেতাকে লাঞ্ছনার অভিযোগ নিয়ে উত্তেজনা

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহী চিনিকলের সহকারী ব্যবস্থাপক (সিভিল) প্রকৌশলী সামিউল ইসলামের বিরুদ্ধে শ্রমিক ইউনিয়নের (সিবিএ) নেতা রফিকুল ইসলামকে মারধরের অভিযোগ নিয়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। অভিযুক্ত প্রকৌশলীকে রাজশাহী থেকে প্রত্যাহার না করলে শ্রমিকরা বৃহত্তর আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছেন। তবে অভিযুক্ত প্রকৌশলী অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, শ্রমিকরাই তাকে লাঞ্ছনা ও মারধরের পর উল্টো তার বিরুদ্ধেই আন্দোলন করছে।

শ্রমিকদের অভিযোগ, গত ২৪ মার্চ সহকারী ব্যবস্থাপক সামিউল, সিবিএ সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলামকে মারধর করেন। এ ঘটনায় অভিযুক্ত প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ^াস দিয়ে শ্রমিকদের থামিয়ে রাখেন চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আবুল বাসার। কিন্তু ব্যবস্থা না নেওয়ায় বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত শ্রমিকেরা চিনিকলে বিক্ষোভ করেন।

এ বিষয়ে রাজশাহী চিনিকলের এমডি আবুল বাসার জানান, ঘটনার পর ‘ঘটনা নিয়ে দুইপক্ষই লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। মহাব্যবস্থাপক (ফাইনান্স) লতিফা খাতুনের নেতৃত্বে চার সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির সদস্যরা হলেন- মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) শাহীনূর রহমান, উপমহাব্যবস্থাপক (সম্প্রসারণ) নজরুল ইসলাম ও ব্যবস্থাপক (উৎপাদন) রুহুল আমিন। কমিটিকে তিন কার্যদিবসে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। প্রতিবেদনের সুপারিশ ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে।’

সিবিএ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জানান, টার্বাইন অপারেটর সেলিম রেজার কোয়ার্টারে পানির সমস্যা। সেলিম কয়েকদিন সহকারী ব্যবস্থাপক (সিভিল) সামিউল ইসলামের দপ্তরে ঘুরছিলেন। এতে বিরক্ত হয়ে সামিউল, সেলিমকে বলেন, রোজায় পাইপ ঠিক করে দেওয়া হবে। এদিকে গত ২৪ মার্চ তিনি (রফিকুল) সেলিম রেজার হয়ে কথা বলতে সামিউল ইসলামের দপ্তরে যান। এতে সামিউল ক্ষুব্ধ ও উত্তেজিত হয়ে রড দিয়ে আঘাত করেন। এসময় শ্রমিকরা সামিউলের দপ্তরে জড়ো হন। পরে এমডির দপ্তরেও উভয়পক্ষে বাকবিতন্ডা হয়। এসময় ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তারা তাদের শান্ত করেন।
রফিকুল ইসলাম বলেন, ঘটনার পর এমডি বিষয়টি কাউকে না জানানোর জন্য অনুরোধ করে প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ^াস দেন। গঠিত তদন্ত কমিটিতে শ্রমিকদের দু’জন ও দু’জন কর্মকর্তাকে রাখার কথা। কিন্তু এমডি যে কমিটি করেছেন তাতে শ্রমিক প্রতিনিধি রাখা হয়নি। এমডি এখন প্রকৌশলী সামিউল ইসলামকে রক্ষার চেষ্টা করছেন। একারণে বুধবার রাতে তিনি কাটাখালী থানায় প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
সিবিএ সভাপতি মাসুদ রানা জানান, ‘সামিউল দুর্নীতিবাজ। সংস্কারের নামে লাখ লাখ টাকা তছরুপ ও সবার সাথে ঝামেলা করেন। প্রতিবাদ করায় ক্ষুব্ধ হয়ে অফিসে সিবিএ সম্পাদক রফিকুলের ওপর হামলা চালান। তাকে দ্রুত রাজশাহী থেকে প্রত্যাহার ও শাস্তি দিতে হবে। অন্যথায় বৃহত্তর আন্দোলন করা হবে।

তবে অভিযুক্ত সহকারী ব্যবস্থাপক সামিউল ইসলাম শ্রমিকদের দাবি অস্বীকার করে উল্টো দতাবি করেন, শ্রমিকেরাই আমাকে মারধর করেছে। দুর্নীতির অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মারধরের অভিযোগ থেকে বাঁচতে তারা এসব কথা বলছেন।

নগরীর কাটাখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তৌহিদুর রহমান বলেন, সিবিএ সম্পাদক রফিকুল ইসলামের লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি চিনিকলের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। সেখানে তদন্ত চলছে। পুলিশও অভিযোগের তদন্ত করবে। তারপর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।