নূরের নূর মসজিদে লাগছে আধুনিকতার ছোঁয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী:
পদ্মার পানি শুকিয়ে চর জেগে ওঠে। কিছুদিনের মধ্যেই চর ভরে যায় কাঁশবনে। নব্বইয়ের দশকে দরিদ্র কৃষক মো. নূর সেই কাঁশবনের খড় কেটেই জীবিকা নির্বাহ করতেন। সকাল থেকে বিকেল অবধি খড় কাটার কাজের মাঝেও তিনি ভুলতেন না নামাজের কথা। নদীপাড়ে কয়েকটি ইট বিছিয়ে নামাজ আদায় করতেন। সেখানে এখন একটি মসজিদ, নাম নূর জামে মসজিদ।
রাজশাহীর শিমলা পার্ক এলাকায় স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তির হাতে তিলে তিলে গড়ে ওঠা মসজিদটি এবার পাচ্ছে আধুনিকতার ছোঁয়া। সময়ের সাথে সাথে জরাজীর্ণ হয়ে পড়া মসজিদটির উন্নয়নে এগিয়ে এসেছেন স্থানীয় সমাজসেবক খন্দকার হাসান কবির। নিজ উদ্যোগে প্রায় ৫ লাখ টাকা ব্যয়ে তিনি মসজিদটিতে বানিয়ে দিচ্ছেন আধুনিক শৌচাগার ও ওযুখানা।
এক সময় শুধু নিজের নামাজ পড়ার উদ্দেশ্যে নিজ হাতেই কয়েকটা ইট বিছিয়েছিলেন কৃষক নূর। নামাজের প্রতি তার আগ্রহ দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে ওই স্থানেই নামাজ পড়া শুরু করেছিলেন স্থানীয়রা। কিছুদিন পর নূর মারা গেলে ১৯৯৬ সালে এই মসজিদ নির্মাণ করেন এলাকাবাসী। কৃষক নূরের সাথে মিলিয়ে মসজিদের নাম দেওয়া হয় নূর জামে মসজিদ।
গেল শনিবার বাদ আসর ফিতা কেটে ও দোয়া মাহফিলের মাধ্যমে উন্নয়ন কাজের উদ্বোধন করা হয়। এ সময় রয়্যালস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সালাউদ্দিন মিন্টু, মসজিদ কমিটির সহ-সভাপতি আইয়ুব আলী, সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম তোতাসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সমাজসেবক খন্দকার হাসান কবির বলেন, ‘কৃষক নূর চরের কাঁশবন থেকে খড় কাটতেন এবং এখানেই বিক্রি করতেন। তিনি বেঁচে থাকার সময় মসজিদটির প্রথম অবকাঠামোটি করেছিলাম। সেই নূর জামে মসজিদ এখন প্রসারিত হয়েছে। মসজিদটির পাশে থাকতে পেরে আমার ভাল লাগছে।’
মসজিদটির আরও উন্নয়নে বিত্তবানদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন মুসল্লিরা। মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম তোতা বলেন, ‘সবার সহযোগিতায় মসজিদটি আমরা গড়ে তুলেছি। নূর চাচা কয়েকটা ইট ফেলেছিলেন বলে আজ এখানে একটা মসজিদ হয়েছে। আমরা এই মসজিদের আরও উন্নয়ন করতে চাই। এ জন্য সবার সহযোগিতা চাই।’

সংশ্লিষ্ট খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button