রুয়েট প্রশাসনিক ভবনে তালা লাগিয়ে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ ঘোষণা শিক্ষার্থীদের

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) শিক্ষার্থীরা ৯ দফা দাবিতে প্রশাসনিক ভবনে তালা লাগিয়ে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ ঘোষণা করেছে। বুধবার (১৫ জানুয়ারি) সকাল ১০টায় তারা প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। একপর্যায়ে প্রশাসন ভবনে তালা লাগিয়ে দেওয়া হয়। এসময় শিক্ষার্থীরা প্রধান ফটক ও পুরকৌশল অনুষদের ডিন কামরুজ্জামান রিপনের কক্ষেও তালা লাগিয়ে দেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রশাসনিক ভবনে তালা লাগানোর পর শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে উপাচার্যের উপস্থিতিতে ৯ দফা দাবি উপস্থাপন করেন। উপাচার্য দাবি মানার আশ্বাস দিলেও শিক্ষার্থীরা তাৎক্ষণিক আনুষ্ঠানিক ঘোষণা চান। কিন্তু আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না দেওয়ায় শিক্ষার্থীরা রুয়েটকে শাটডাউনের ঘোষণা দেন।
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হচ্ছে, পরবর্তী সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষার খাতায় কোডিং সিস্টেম চালু এবং এই বিষয়ক প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে যাতে মূল্যায়ন প্রক্রিয়া স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ হয়; সেমিস্টারের রেজাল্ট ও গ্রেডশিট দ্রুত প্রকাশ করতে হবে এবং খাতা রিভিউ করার সুযোগ দিতে হবে; যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে বিগত ফ্যাসিস্ট আমলে বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে, তাদের অনতিবিলম্বে সাময়িক বহিষ্কার ও অতিদ্রুত তদন্তের সাপেক্ষে স্থায়ী বহিষ্কার করে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে। এছাড়া ছাত্রলীগের পোস্টেড নেতা সৌমিক, লতিফসহ অন্যদের ছাত্রত্ব বাতিল করতে হবে। শিক্ষকদের নিয়মিত ক্লাস পরিচালনা নিশ্চিত করতে হবে এবং ৩-৪ দিন ক্লাস নিয়ে পুরো সেমিস্টারের উপস্থিতি গণনা করা যাবে না। যদি শিক্ষকের ব্যস্ততা-অনুপস্থিতির কারণে কোনও ক্লাস মিস যায়, তবে সেক্ষেত্রে সব শিক্ষার্থীকে ওই দিনের অ্যাটেন্ডেন্স দিতে হবে এবং কোনোদিন এক্সট্রা ক্লাস নিলে, এক্সটা ক্লাসের অ্যাটেন্ডেন্স হিসাবে কাউন্ট করতে হবে; প্রতি মাসে প্রতিটি ডিপার্টমেন্টে শিক্ষার্থীদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা সেশন আয়োজন করতে হবে, যা শিক্ষার্থীদের মানসিক চাপ কমাতে সহায়ক হবে। এছাড়া প্রতিটি ডিপার্টমেন্টের শিক্ষকদের নিয়ে প্রতি মাসে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক সেমিনার আয়োজন করতে হবে। সম্প্রতি হজোর মোড়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় নির্ধারিত সময়ের মধ্যে চার্জশিট প্রদান করার কথা থাকলেও তা দেওয়া হয়নি। অতি দ্রুত ঐ মামলার বাকি কার্যক্রম শুরু করতে হবে এবং রুয়েট ক্যাম্পাস ও আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করতে হবে; ইচ্ছাকৃতভাবে পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের অকৃতকার্য করার দায়ে গোলাম মোস্তাকিম ও সিভিল ফ্যাকাল্টির ডিন কামরুজ্জামান রিপনসহ অভিযুক্ত সকল শিক্ষকের বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে; শিক্ষকদের শিক্ষার্থীদের প্রতি সদাচরণ করতে হবে এবং শিক্ষকদের কার্যক্রমের মূল্যায়ন ও জবাবদিহিতার ব্যবস্থা থাকতে হবে এবং অনতিবিলম্বে জমা করা ১২ দফার বাস্তবায়ন করতে হবে।
রুয়েট শিক্ষার্থীরা জানান, দাবি বাস্তবায়নে আশানুরূপ ঘোষণা না আসায় কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা দিয়েছেন তারা। এ ব্যাপারে বুধবার বিকালে উপাচার্যের দপ্তরে জরুরী সভা করছিলেন সংশ্লিষ্টরা। এ বিষয়ে মতামতের জন্য অনেক চেষ্টা করেও রুয়েট উপাচার্য প্রফেসর আব্দুর রাজ্জাকের সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি।