ধুমপানের কারণে সারা বিশ্বে প্রতিবছর ৮০ লক্ষ মানুষ মৃত্যুবরণ করেন

রাজশাহীতে সাংবাদিকদের নিয়ে বাংলাদেশ ব্ল্রাইন্ড মিশনের ধুমপান এবং তামাকজাত দ্রব্যের ক্ষতি ও প্রতিকার বিষয়ক মতবিনিময় কর্মশালায় তথ্য

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) তথ্য মতে সারা বিশ্বের ১০০ কোটি মানুষ ধুমপান করেন। শুধু ধুমপানের কারণে সারা বিশ্বে প্রতিবছর ৮০ লক্ষ মানুষ মৃত্যুবরণ করেন। এরমধ্যে ৭- লক্ষ মানুষ সরাসরি ধুমপান জণিত কারণে এবং বাকিরা ধুমপায়ীদের সংস্পর্শে থাকার কারণে মুত্যুকরণ করেন। শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) রাজশাহী বিভাগীয় শহরের সেফগার্ডেন চাইনিজ রেস্টুরেন্টে ধুমপান এবং তামাকজাত দ্রব্যের ক্ষতি ও প্রতিকার বিষয়ক মতবিনিময় কর্মশালায় এ তথ্য জানানো হয়।

২০২২ সালের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক গবেষণার তথ্যানুসারে, ‘বাংলাদেশে প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে ধূমপানের হার ২৮.৬ শতাংশ। এর মধ্যে পুরুষ ধূমপায়ীর হার ৪৭.৭ শতাংশ এবং নারী ধূমপায়ীর হার ৮.৭ শতাংশ। ধূমপানের কারণে মৃত্যুর হার দিন দিন বাড়ছে। ২০২১ সালের আরেক গবেষণার তথ্যানুসারে অনুসারে, বাংলাদেশে ধূমপানের কারণে প্রতিবছর প্রায় ১ লাখ ৬০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। এর মধ্যে পুরুষ মৃত্যুর হার ২০.৮ শতাংশ এবং নারী মৃত্যুর হার ০.৯ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্লাইন্ড মিশনের আয়োজনে কর্মশালায় সাংবাদিকগণ উন্মুক্তস্থানে ধুমপান না করা, ধুমপান এবং তামাকদ্রব্য কেনা বেচায় ও উৎপাদনে আইনের কঠোর প্রয়োগ, সন্তানদের ও পরিবারের সদস্যদের সাথে ধুমপানের ক্ষতিকর দিক নিয়ে কাউন্সিলিং, ধুমপান ছাড়তে উৎসাহ প্রদানের জন্য পুর¯ৃ‹ত করা, তামাক জাতীয় দ্রব্যর উপর অধিকহারে করারোপ করা, মিডিয়ায় ধারাবাহিকভাবে তামাক বিরোধি এবং ধুমপান বিরোধী লেখা উপস্থাপনের সুপারিশ করেন।

কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্লাইন্ড মিশনের সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আবেদুল ইসলাম। কর্মশালা পরিচালনা ও ফেসিলিটেশন করেন জাতীয় ভাবে স্বনামধন্য কনসালটেন্ট শুভাশীষ চন্দ্র মহন্ত ও রোগত্বত্ববিদ সামসুল ইসলাম। কর্মশালায় রাজশাহী অঞ্চলের ২৬ জন জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকা, ইলেকট্রনিক, অনলাইন মিডিয়ার সাংবাদিক অংশ নেন। এছাড়াও বাংলাদেশ ব্লাইন্ড মিশনের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন। কর্মশালা সঞ্চালনা করেন খন্দকার মোহাম্মদ নাসিরুজ্জামান ও বিবিএমের তারেক মাহমুদ।

ধুমপানের ক্ষতি কমাতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নির্দেশিকা বা গাইডলাইন :
বিশ্বের ১.২৫ বিলিয়ন তামাক ব্যবহারকারীদের মধ্যে ৬০ শতাংশের বেশি মানুষ তামাকের নেশা ছাড়তে চায়, আর ৭০ শতাংশ মানুষ এই বিষয়ে কোনো স্বাস্থ্য পরিষেবা বা অন্য সাহায্য পান না। হু-র এক চিকিৎসক বলেছেন, ধূমপান ত্যাগ করার সংগ্রাম অপরিসীম। আমাদের বুঝতে হবে যে এটা করতে শক্তি লাগে এবং এই আসক্তি কাটিয়ে ওঠার জন্য ব্যক্তি এবং তাদের পরিবারকে কষ্ট সহ্য করতে হয়।

আচরণগত সহায়তার সঙ্গে ওষুধের সংমিশ্রণ সফলভাবে ধূমপান ত্যাগ করার সম্ভাবনাকে অনেক বাড়িয়ে দেয়। ডব্লিউএইচও তামাক ছাড়ার কার্যকরী চিকিৎসা হিসেবে ভেরেনিক্লিন, নিকোটিন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি (এনআরটি), বুপ্রোপিয়ন এবং সাইটিসিনের মতো ওষুধের সুপারিশ করেছে।

২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে নিকোটিন গাম এবং প্যাচ প্রথম হু-অনুমোদিত এনআরটি পণ্য হয়ে ওঠে। এছাড়া স্বাস্থ্যকর্মীদের কাছ থেকে সংক্ষিপ্ত কাউন্সেলিং (৩০ সেকেন্ড থেকে ৩ মিনিট) এবং আরও নিবিড় আচরণগত সহায়তা যেমন ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা ফোন কাউন্সেলিংয়ের সুপারিশ করেছে।

সংশ্লিষ্ট খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button