‘দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে অন্তর্বতী সরকারকে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে’
রাবি প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের বিবৃতি

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য অন্তর্বতীকালীন সরকারের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ে (রাবি) মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ। গতকাল বুধবার (১৪ আগস্ট) সগঠনের সকল সদস্যের পক্ষে প্রদত্ত এক বিবৃতিতে এই দাবি জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘অতিসম্প্রতি আমাদের এই প্রিয় মাতৃভূমিতে সংঘটিত ভয়ানক সহিংস ঘটনায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে। এসব সহিংস ঘটনার প্রেক্ষাপটে আমরা শঙ্কার সঙ্গে লক্ষ করছি, ৩০ লাখ আত্মদানকারী শহীদের রক্তের বিনিময়ে প্রাপ্ত বাঙালির এই স্বদেশ ভূমিতেই বাঙালি জাতি ও বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্বপ্নদ্রষ্টা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় চার নেতা ও বীর সন্তানদের ভাস্কর্য ভাংচুর করা হয়েছে। একই সঙ্গে অগ্নিসংযোগ ও মারাত্মক ক্ষতিসাধন করা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাসমৃদ্ধ রাষ্ট্রীয় ও জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ অনেক স্থাপনার। বিভিন্ন জায়গায় এখনো এসব সহিংস তান্ডব চলমান। আমাদের মনে রাখতে হবে, সুমহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত বঙ্গবন্ধুর ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়িটি কারো ব্যক্তিগত সম্পদ নয়। এটি বাঙালি জাতি ও রাষ্ট্রের জাতীয় সম্পদ ও ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ দলিল।’
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের সব সদস্য এসব সহিংস ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। একই সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাসমৃদ্ধ সব জাতীয় সম্পদ মেরামত ও সংরক্ষণের জোর দাবি জানাই। নবগঠিত অন্তর্বতীকালীন সরকারের কাছে জোর দাবি, প্রাণঘাতী সহিংস ঘটনা বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘বাংলাদেশ রাষ্ট্র সব ধর্ম, বর্ণ, গোষ্ঠী এবং মত ও আদর্শের মানুষের বলে আমরা বিশ্বাস করি। কিন্তু দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের ঘর-বাড়ি, ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান ও উপাসনালয়ে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে, হচ্ছে। আক্রমণ করা হচ্ছে রাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর। আমরা এসব হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানোর পাশাপাশি জড়িতদের কঠোর শাস্তি দাবি করছি।’
বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, শোষণ ও বৈষম্যহীন, সমতাভিত্তিক অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে ধর্ম-বর্ণ-দল-মত-আদর্শ নির্বিশেষে এদেশের সব মানুষ প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। এসব ক্ষেত্রে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা এখন জরুরি। অন্যথায় রাষ্ট্রীয় কাঠামো দুর্বল বলে প্রতীয়মান হবে। তাই এসব সহিংস ঘটনা বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ ও নিরাপত্তাহীন লোকদের নিরাপত্তা প্রদানের জন্য আইনি পদক্ষেপ নিতে হবে।’