বাঘায় বাবুল হত্যার মদদ দাতারা জানাযায় আসেনি : শাহরিয়ার

বাঘা(রাজশাহী)সংবাদদাতা : রাজশাহীর বাঘায় মানব বন্ধনে হামলার শিকার উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবুলের জানাযা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৭জুন) সকালে বাঘা উচ্চ বিদ্যায় মাঠে ফুলে-ফুলে শ্রদ্ধা নিবেদনের মাধ্যমে অগনিত মানুষের উপস্থিতিতে তাঁর জানাযা করান বাঘা ফাজিল মাদ্রাসার সাবেক অধ্যক্ষ মওলানা আব্দুল গফুর মিঞা।

এর আগে জানাযায় দাড়িয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আলহাজ শাহরিয়ার আলম বলেন, এটি পরিকল্পিত হত্যা কান্ড। এই হত্যাকন্ডে যারা মদদ যুগিয়েছে তারা কেউ জানাযায় আসেননি।

সকাল ১১ টায় বাঘা উপজেলা আ’লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ওয়াহেদ সাদিক কবিরের সঞ্চালনায় শাহরিয়ার আলম বলেন, আমি সাধারণত কোন জানাযায় গিয়ে বক্তব্য দিতে চাইনা। তার পরেও আজকে বাবুল ভাইয়ের লাশ
সামনে রেখে দু’টি কথা বলতে হচ্ছে। আশরাফুল ইসলাম বাবুল অন্যান্ত শান্ত ও সাদা-মনের একজন মানুষ ছিলেন। তার অপরাধ, তিনি আমাকে বিপুল ভোটের ব্যাবধানে চতুর্থবারের ন্যায় সংসদ সদস্য হতে সহায়তা করেছেন। আমি
পরিষ্কার দেখতে পাচ্ছি যারা বাবুল ভাইকে হত্যা করেছে, তাদের মদদ দাতারা কেউ এ জানাযায় উপস্তিত হননি।
এদের মধ্যে রাজশাহী সিটি মেয়র এ এইচ এম খাইরুজ্জামান লিটন, সাবেক জেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান আসাদ, জেলা আ’লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক এ্যাড: লায়েব উদ্দিন লাভলু ও জেলা যুবলীগ নেতা মেরাজুল ইসলাম মেরাজ বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন। একই সাথে এসব নেতাদের
মোবাইলের কললিষ্ট তুলে যাচাই করলে বাঘার কোন-কোন ক্ষুনি তাদের সাথে যোগাযোগ রেখে ছিলেন সেটিও বেরিয়ে আসবে এবং এর সত্যতা মিলবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি ।

                                             

এর আগে জানাযায় উপস্থিত হয়ে স্মৃতি চারণ মূলক বক্তব্য রাখেন, রাজশাহী জেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান সরকারের স্থানীয় সরকার ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী আব্দুল ওয়াদুদ দারা । তিনি নিহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে উপস্থিত দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, দলের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করে যারা সন্ত্রাস সৃষ্টি করছে এবং মানুষকে হত্যার সহযোগিতা করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে কথা বলেছি, তিনি আমাকে এমনটি আশ্বস্ত করেছেন।

এ জানাযায় উপস্থিত ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিন, রাজশাহী মহানগর আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার, রাজশাহী জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর ইকবাল, চারঘাট-বাঘার সংসদ সদস্য
শাহরিয়ার আলমের পিতা ও বিশিষ্ট সমাজ সেবক মোহাম্মদ শামসুদ্দীন, বাঘা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: তরিকুল ইসলাম , আড়ানী পৌর মেয়র মুক্তার আলী ,আশরাফুল ইসলামের বড়ভাই বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির
সভাপতি শিক্ষক আনজারুল ইসলাম,নিহত বাবুল ইসলামের দুই সন্তান ও পাশ্ববর্তী চারঘাট,পুটিয়া এবং লালপুর উপজেলা আ’লীগের নেতৃবৃন্দ সহ বাঘা উপজেলা আ’লীগের সকল নেতৃবৃন্দ ও সকল সহযোগী সংগঠনের
নেতৃবৃন্দ ও সামাজিক সংগঠন সহ অত্র এলাকার সর্বস্তরের জনসাধারণ। জানানা শেষে আশরাফুল ইসলাম বাবুলকে তার নিজ গ্রাম গাওপাড়া এলাকায় পারিবারিক গোরস্থানে তার পিতা আমির হোসেন আমুর কবরের পাশে চির
নিদ্রায় শায়িত করা হয়েছে। তাঁর স্ত্রী ও শোকসপ্ত পরিবারের সাথে দেখা করে সমবেদনা জানয়িছেন সাবেক নারী সংসদ সদস্য বেগম অখতার জাহান, সমবায় প্রতিমন্ত্রী আব্দুল ওয়াদুদ দারা,স্থানীয় সংসদ সদস্য শাহরিয়ার আলম ও
ডাবলু সরকার সহ জানাযায় উপস্থিত অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

                                                     

উল্লেখ্য, গত শনিবার (২২ জুন) বাঘার পৌর মেয়র আক্কাস আলীর অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারী কর্মকান্ডের প্রতিবাদে সকাল ১০টায় বাঘা উপজেলা পরিষদের সামনে মানববন্ধনের আয়োজন করে বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগ। অপরদিকে নিজের অপকর্ম ঢাকতে ঠিক একই সময়ে উপজেলা নাগরিক কমিটির ব্যানারে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের দলিল লেখকদের আধিপত্য বিস্তার ও অনিয়ম দুর্নীতির প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের ঘোষণা করেন আক্কাস আলী ও তার সমার্থকরা। ঘটনার এক পর্যায় মানববন্ধন শুরু হওয়ার ঠিক ১৫ থেকে ২০ মিনিটের মাথায় আক্কাস-সহ তার বাহিনী সেই মানব বন্ধনে হামলা চালাই। এ নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত আশরাফুল ইসলাম বাবুল ঘটনার তিনদিন পর বুধবার (২৬ জুন) বিকেলে রামেক হাসপাতালের আইসিউতে মৃত্যু বরণ করেন। এ ঘটনার পর থেকে এলাকায় উত্তাপ্ত অবস্থা বিরাজ করছে।

সংশ্লিষ্ট খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button