‘প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ দেশ ও মানুষের কল্যাণের রাজনীতি করছে : প্রতিমন্ত্রী আব্দুল ওয়াদুদ দারা
রাজশাহীতে বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনায় আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহীতে বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনায় আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী (প্লাটিনাম জয়ন্তী) পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে গতকাল রবিবার (২৩ জুন) রাজশাহী জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ এবং জেলা ও মহানগর যুবলীগ নানা কর্মসূচি পালন করেছে। কর্মসূচির অংশ হিসেবে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী আব্দুল ওয়াদুদ দারার নেতৃত্বে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ রবিবার সকালে রাজশাহী কলেজ প্রাঙ্গনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এদিকে দুপুরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ অডিটরিয়ামে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী আব্দুল ওয়াদুদ দারা বলেন, ‘প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ দেশ ও মানুষের কল্যাণের রাজনীতি করছে। এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের শক্তির মূলউৎস জনগণ এবং তৃণমূলের নেতাকর্মীবৃন্দ। প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার বজ্রকঠিন দিকনির্দেশনায় বাংলাদেশকে ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশে পরিণত করতে আওয়ামী লীগের সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন ঢাকার রোজ গার্ডেনে যাত্রা শুরুর পর নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে জনগণের দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আজ উপমহাদেশের অন্যতম প্রাচীন, বৃহৎ, গণতান্ত্রিক ও অসম্প্রদায়িক রাজনৈতিক দলে পরিণত হয়েছে। তিনি বলেন, বাঙালির জাতীয় মুক্তির যে আন্দোলন, সংগ্রাম ও স্বপ্ন তা বাস্তবায়নে আওয়ামী লীগই একমাত্র দল, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে যে দল শোষণের শৃঙ্খল ভেঙে স্বাধীনতার সোনালি সূর্যকে এঁকে দিয়েছে বাংলার সবুজ জমিনের ওপরে।
উপস্থিত নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, ষাটের দশকের শুরুতেই পুরো বাঙালি জাতিকে আওয়ামী লীগের পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ করেছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাঁরই ধারাবাহিকতায় ৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৫৪’র যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে ভূমিধ্বস জয়, ৫৬’র শাসনতন্ত্র আন্দোলন, ৫৮ সালে আইয়ুব খাঁর সামরিক আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলন, ৬২’র শিক্ষা আন্দোলন, বাংলার ম্যাগনাকার্টা ৬৬’র ছয় দফা, ৬৯’র গণঅভ্যুত্থান, ৭০’র নির্বাচন এবং পরিশেষে ১৯৭১ সালে ২৬৬ দিনের রক্তক্ষয়ী স্বাধীনতা যুদ্ধে অর্জিত হয় আমাদের স্বাধীন স্বার্বভৌম বাংলাদেশের গৌরবোজ্জ্বল লাল-সবুজের পতাকা। কাজেই, বাংলাদেশের ইতিহাসের প্রত্যেকটি অধ্যায়ের শিরোনামে উজ্জ্বল হয়ে আছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নাম।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট বিপথগামী ঘাতকের নির্মম বুলেট বাঙালি জাতিকে পিছিয়ে দেয় ২১ বছর। হায়েনারা ভেবেছিল যে বাংলাদেশ আর কোনোদিন উঠে দাঁড়াতে পারবে না। তাদের সেই ধারণাকে মিথ্যা প্রমাণ করেছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বাংলাদেশকে পৌঁছে দিয়েছেন এমন এক উচ্চতায় যেখান থেকে আর পেছনে তাকানোর সুযোগ নেই। তিনি বলেন, দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্র কিন্তু এখনো থেমে নেই। সবাইকে এই ব্যাপারে সোচ্চার থাকতে হবে। সকল বাধা রুখে দিয়ে দেশের উন্নয়নের স্বার্থে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনা মোতাবেক সকল স্তরের নেতা-কর্মীদের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে হবে।
রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ ডাবলু সরকার, জেলার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি আয়েন উদ্দিন, সহ-সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম আসাদুজ্জামান ও আব্দুস সামাদ মোল্লা, স্বাস্থ্য সম্পাদক ডা. চিন্ময় কান্তি দাস, জেলা যুবলীগের সভাপতি ফয়সাল মাহমুদ হাসান সজল ও সাধারণ সম্পাদক ইয়াসির আরাফাত সৈকত, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মর্জিনা পারভিন ও সাধারণ সম্পাদক নাসরিন আকতার মিতা, জেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি নার্গিস শিউলী ও সাধারণ সম্পাদক বিপাশা খাতুন প্রমুখ বক্তব্য দেন। আলোচনা সভায় রাজশাহীর ৯ উপজেলার ১৮ জন প্রবীণ আওয়ামী লীগ কর্মীকে বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হয়।
অন্যদিকে গতকাল রবিবার সকালে বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামালে নেতৃত্বে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ নগরীর কুমারপাড়াস্থ দলীয় কার্যালয়ের ‘স্বাধীনতা চত্বরে’ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জাতীয় চার নেতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন। এরপর সকাল সাড়ে ১০ টায় দলীয় কার্যালয়ে আলোচনা সভা, কেক কাটা ও মিষ্টি বিতরণ করা হয়। এছাড়া রাজশাহী জেলা ও মহানগর যুবলীগ পৃথক আয়োজনে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুস্পস্তবক অর্পন, আলোচনা সভা আয়োজন করে।