রাজশাহীতে সরকারি রাস্তা দখলের প্রতিবাদ করায় ভুক্তভোগীদের ওপর জামায়াত শিবিরের হামলার অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহী মহানগরীতে সরকারি রাস্তা দখলে প্রতিবাদ করায় ভুক্তভোগীদের ওপর হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল শুক্রবার দুপুরে মহানগরীর মির্জাপুর এলাকায় পুলিশের উপস্থিতিতে এই হামলার ঘটনা ঘটে। হামলাকারীরা জামায়াত শিবিরের রাজনীতির সাথে জড়িত। তাদের বিরুদ্ধে নগরীল মতিহার থানায় নাশকতার একাধিক মামলাও রয়েছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী আরিফুর রহমান বকুল রাজশাহী মেট্রেপলিটন পুলিশ মতিহার থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগে বলা হয়, অভিযুক্ত (বিবাদী) নজরুল হাজী নগরীর বিনোদপুর বাজার সংলগ্ন মির্জাপুর মৌজার আর.এস.- ৬৩,৬৫,৬৮, ৬৯ দাগে বসবাসকারি মানুষের চলাচলের রাস্তায় প্রাচির নির্মাণ করে বন্ধ করার অপপ্রচেষ্টা করছেন। রাস্তাটি সরকারি এবং পাশে সিটিকর্পোরেশনের ড্রেন রয়েছে। কিন্তু বিবাদী রাস্তার ওপর দিয়ে সাধারণকে ব্যবহার করতে দিবেনা বলে অর্থ, প্রভাব ও লোকবলের জোরে প্রাচির নির্মাণ করে রাস্তাটি বন্ধ করে দেয়।
এর আগে বিবাদী একই রাস্তায় রান্নাঘর নির্মাণ করে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। গত ২৯ এপ্রিল রাজশাহী সিটি করপোরেশন রান্না ঘরটি অবৈধ স্থাপনা হিসেবে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে উচ্ছেদ করে। রাসিকের এক্সিকিউটিভ ম্যজিস্ট্রেট সাদিয়া আফরিন এই অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযানে সহযোগিতা করেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, মতিহার থানা পুলিশ, রাসিকের নিরাপত্তা শাখা ও ফায়ার সার্ভিস।
জানা যায়, অবৈধ স্থাপনাটি নির্মাণ করে ঐ রাস্তায় চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন অভিযুক্ত জামায়াত নেতা নজরুল ইসলাম। স্থাপনাটি সরাতে রাজশাহী সিটি করপোরেশন তাকে সাত দিনের আল্টিমেটাম দেয়। কিন্তু তিনি স্থাপনাটি সরাননি। তাই, সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে এই উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
ভুক্তভোগীরা জানান, একই রাস্তায় আবারো দেয়াল নির্মাণ করে চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন জামায়াত নেতা নজরুল ইসলাম। ঐ রাস্তার সামনে ও পিছনে সরকারি রাস্তা। ফলে অবৈধভাবে রাস্তাটি বন্ধ করা অপরাধের সামিল। ফলে উক্ত এলাকায় বসবাসকারী পরিবারের অসহায় সাধারণ মানুষ ও স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের মইয়ের মাধ্যমে প্রাচির অতিক্রম করে চলাচল করতে হচ্ছিল। এ ঘটনার প্রতিবাদ করায় গতকাল শুক্রবার বিবাদী নজরুল হাজীর ভাতিজা, তার ভাতিজা পলাশ, পিতা- মুন্টু হাজী ভুক্তভোগীদের ওপর হামলা চালায়। তারা ইট- পাটকেল নিক্ষেপ এবং বাড়ি ঘর ভাঙ্গচুর করে। ফলে বাড়ির ভিতরে অবস্থানরত মহিলা ও শিশু সহ রক্তাক্ত যখম হয় ও বাদী নিজেও আহত হন। বাহিনীর অন্য সদস্য নাবিল, পিতা- নজরুল হাজী, শাহীন, পিতা- ছারু, শামীম, পিতা- ছারু, জহির, পিতা- খালেক, সুজন সকলের ঠিকানা চরশ্যামপুর, থানা মতিহার, জেলা- রাজশাহী।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিবাদীরা রাস্তাটি দখল করে প্রাচির নির্মাণ করার জন্য ভাড়া করে আনুমানিক ৩০-৩৫ জন মাস্তানকে নিয়ে এসে অস্ত্র হাতে পাড়া মহল্লায় শো-ডাউন দিয়ে ভয় ভিতী প্রদর্শন করে। এছাড়া সাধারণ মানুষকে বলে কে আসবি আয় দেখি। এ ঘটনায় মোঃ মাসুদ, পিতা- আব্দুর রাজ্জাক, সাইদ হাসান, পিতা- মরহুম রায়হান মেম্বার, মার্জিয়া বেগম, স্বামী- মরহুম লতিফ ড্রাইভার প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী রয়েছেন।
এ বিষয়ে রাসিকের শালিস কমিটির আহ্বায়ক ও ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোহাম্মদ আলাউদ্দিন বলেন, আমরা কোনো অন্যায়ের সাথে আপোষ করবো না। সিটি কর্পোরেশনের রাস্তায় কোনো প্রভাবশালীই দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করতে পারবে না। মানুষের চলাচলের অধিকারে কেউ বাধা হতে দাঁড়াতে পারবে না।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত নজরুল ইসলামের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে নগরীর মতিহার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হামলার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে জড়িতাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।