রুয়েটে নিয়োগে দুর্নীতি : সাবেক উপাচার্য ও ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েটে) সাবেক উপাচার্য ও ইলেকট্রিক্যাল বিভাগের অধ্যাপক ড. মোঃ রফিকুল ইসলাম সেখ এবং সাবেক ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ও ইইই বিভাগের অধ্যাপক ড. মোঃ সেলিম হোসেনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোঃ আমিনুল ইসলাম বুধবার দণ্ডবিধির ৪০৯ ও ১০৯ ধারাসহ ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় দুদকের রাজশাহী সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার আর্জিতে বলা হয়, আসামিদ্বয় পরস্পর যোগসাজশে, অসৎ অভিপ্রায়ে নিজেরা লাভবান হয়ে অন্যদের লাভবান করার জন্য অপরাধমূলক অসদাচরণ ও বিশ্বাসভঙ্গ করে অর্পিত ক্ষমতার অপব্যবহার করেন। তারা লিখিত পরীক্ষায় কম নম্বরপ্রাপ্ত প্রার্থীগণকে মৌখিক পরীক্ষায় বেশি নম্বর প্রদান করেন। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি মোতাবেক ৬ জন সেকশন অফিসারের স্থলে ১৩ জনকে নিয়োগ প্রদান করেন। জুনিয়র সেকশন অফিসার পদে নিয়োগের অনুমোদন ও শূন্যপদ না থাকা সত্ত্বেও সহকারী লাইব্রেরিয়ান পদের বিপরীতে জুনিয়র সেকশন অফিসার পদে নিয়োগ প্রদান করেন। পিএ টু ভিসি-ডিরেকটর পদে ২ জনকে নিয়োগের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করলেও ৩ জনকে নিয়োগ প্রদান করেন। ডাটাএন্ট্রি অপারেটর পদে ১ জনকে নিয়োগের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করলেও ২ জনকে নিয়োগ প্রদান করেন। মালি পদে ৩ জনকে নিয়োগ প্রদানের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করলেও ৭ জনকে নিয়োগ প্রদান করেন। ড্রাইভার পদে ১ জনকে নিয়োগ প্রদানের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করলেও ৩ জনকে নিয়োগ প্রদান করেন। সহকারী কুক পদে ৩ জনকে নিয়োগ প্রদানের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করলেও ৫ জনকে নিয়োগ প্রদান করেন। অতিরিক্ত নিয়োগ প্রাপ্তদের জুন-২০২১ থেকে আগস্ট-২০২৩ পর্যন্ত বেতন ভাতাদি বাবদ সরকারের মোট ১ কোটি ২৬ লাখ ১২ হাজার ১০৯ টাকা আর্থিক ক্ষতিসাধন করেছেন। এসব কারণে দুর্নীতি দমন কমিশন রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোঃ আমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে দন্ডবিধি ৪০৯/১০৯ ধারা তৎসহ ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় দুর্নীতি দমন কমিশন, সমন্বিত জেলা কার্যালয়, রাজশাহীতে গতকাল বুধবার (২৭ মার্চ) মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-০৩ তারিখ: ২৭/৩/২০২৪।
আসামিরা দুইজনই একই জেলার (সিরাজগঞ্জ) স্থায়ী বাসিন্দা বলে মামলার আর্জিতে উল্লেখ করা হয়েছে। আসামি সাবেক উপাচার্য ড. মোঃ রফিকুল ইসলাম সেখ সিরাজগঞ্জ জেলার সদর থানার ছাব্বিশা গ্রামের মৃত আব্দুস সামাদ সেখ এর ছেলে এবং আসামি ড. মোঃ সেলিম হোসেন একই জেলার শাহজাদপুর থানার শ্রীফলতলা গ্রামের মোঃ আব্দুর রহমানের ছেলে।
মামলার বাদী মোঃ আমিনুল ইসলাম জানান, ইউজিসির সুপারিশের ভিত্তিতে ২০২৩ সালের ২৮ মার্চ অনুসন্ধান শুরু করি। দীর্ঘ অনুসন্ধান শেষে গত জানুয়ারিতে মামলা করার জন্য অনুমোদন চাওয়া হয়। এরপর গেল সপ্তাহে দুদকের অনুসন্ধান ও তদন্ত বিভাগ থেকে তাদের নামে মামলা দায়েরের অনুমোদন দেওয়া হয়। এরপর নিয়ম অনুযায়ী মামলা করা হয়।
এ বিষয়ে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম সেখ বলেন, দুদকের মামলার বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই। তিনি দাবি করেন, নিয়োগে কোনো অনিয়ম হয়নি। মামলা হলে আইনিভাবেই তা মোকাবিলা করা হবে।