রাজশাহীতে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর ৫৬ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপিত

মানুষ ছাড়া ক্ষ্যাপা রে তুই মূল হারাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক: “মানুষ ছাড়া ক্ষ্যাপা রে তুই মূল হারাবি” স্লোগানে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী রাজশাহী জেলা সংসদ সংগঠনটির ৫৬ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন করেছে। প্রেক্ষিত বিবেচনায় এবার বাউল ও মরমী গান, কবিতাকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। অনুষ্ঠানে গ্রাম, শহরের জাত বাউল ও নগর বাউল’র সমাবেশ  ঘটানো হয়। উদীচীর কিশোর  শিল্পীরাও এতে বাউল ও মরমী গান পরিবেশন করেন।
মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) বিকাল সাড়ে ৪ টায় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আয়োজনের উদ্বোধন করেন ভাষা সৈনিক মোশাররফ হোসেন আখুঞ্জী। উদীচী রাজশাহী জেলা সংসদের সহসাধারণ সম্পাদক বিধান চন্দ্র সরকার, সংগঠন বিষয়ক সম্পাদক শাহিনুর রহমান সোনা ও সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য সেলিনা বানু’র সঞ্চালনায়  সভাপতিত্ব করেন উদীচী রাজশাহী জেলা সংসদের সভাপতি ও কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ জুলফিকার আহমেদ গোলাপ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলা সংসদের সাধারণ সম্পাদক রণজিৎ কুমার দাস। বক্তব্য রাখেন ভাষা সৈনিক মোশাররফ হোসেন আখুঞ্জী ও প্রগতি লেখক সংঘ রাজশাহীর সাধারণ সম্পাদক শাহ মো: জিয়া উদ্দিন।

এসময় সিপিবি রাজশাহী জেলা সভাপতি হুমায়ুন রেজা জেনু, খেলাঘর রাজশাহী জেলা সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ হোসেন  মাসুদ,  উদীচী রাজশাহী জেলা সংসদের কোষাধ্যক্ষ সন্তোষ কুমার, সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য সুবোধ কবিরাজ, সদস্য জীবন কুমার, উদীচী মচমইল শাখা সংসদের সভাপতি আক্কাস আলী-সহ নেতৃবৃন্দ ও শিল্পীরা-সহ রাজশাহীর সাংস্কৃতিক পরিমন্ডলের একাংশ উপস্থিত ছিলেন।

বাউল ও মরমী গানের পরিবেশনায় ছিলেন উদীচী রাজশাহী জেলা সংসদের শিল্পী তরুণ ধর, শিউলি মার্ডি, সাথী, মাইনুর মুর্শিদ মৃদু, তুলি গোস্বামী, অদিতি, মেঘলা, সুস্মিতা, নদী, বিথী, দুয়েতা, রাজশ্রী, বিদ্যা, প্রিয়ম ও জয়িতা। রাজশাহী বেতার শিল্পী সংস্থার মনজু রহমান শান্ত লোকসংগীত পরিবেশন করেন। রবীন্দ্রনাথের বাউল কতিতা আবৃত্তি করেন সেলিনা বানু,  রতন ভট্টাচার্য,  বিধান চন্দ্র সরকার ও খালেদা কেয়া। নৃত্য পরিবেশন করে শিশু শিল্পী প্রিয়ন্তী ধর। এরপর উদীচী মচমইল শাখা সংসদের বাউল শিল্পীদের মধ্যে মনির উদ্দিন, আব্দুল আজিজ দেওয়ান, নাজমুল ইসলাম ও শহিদুল ইসলাম বাউল ও মরমী গান পরিবেশন করেন। শেষে রাজশাহীর আদিবাসী ফোক ব্যান্ড কারসা তাদের জমজমাট পরিবেশনা উপস্থাপন করেন। এতে জয় খ্রিষ্টফার বিশ্বাস, প্রশান্ত মিঞ্জ, পেরিলো হেমব্রম, মান্না রবিদাস শ্রী, হৃদয় মূর্মূ, মাইকেল সরেন, সৈকত বাস্কে ও ইমন বিশ্বাস অংশ গ্রহন করেন। এছাড়া অন্যান্য শিল্পীরাও এতে লালনগীতি,  বাউল গান ও মরমী গান পরিবেশন করেন।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন,  দেশে বাউল মরমী শিল্পী সহ সাংস্কৃতিক পরিমন্ডলের ওপর সহিংস হামলা বন্ধ করতে হবে, ইতোপূর্বে সংঘটিত সকল হামলার বিচার ত্বরান্বিত করতে হবে। স্বাধাীন বাংলার হাজার বছরের ঐতিহ্য বাউল ও মরমী শিল্পীদের স্বাধীন ও নিরাপদ পথচলার ব্যবস্থা রাষ্ট্রকেই করতে হবে।  সাম্রাজ্যবাদ এবং মৌলবাদকে প্রতিহত করে উদীচী কর্মীদের নেতৃত্বে গণ সাংস্কৃতিক জাগরণ গড়ে তুলতে হবে।

সংশ্লিষ্ট খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button