রাজশাহী পর্যটন মোটেলের ম্যানেজারের ভাগনের চাকরি স্থায়ী করতে সেরা কর্মীকে যোগদান করানো হচ্ছে না!
নিজস্ব প্রতিবেদক :
করোনা কালে ম্যনেজারের ভাগনের অস্থায়ী চাকরি স্থায়ী করার চেষ্টায় যোগ দিতে দেয়া হচ্ছে না রাজশাহী পর্যটন মোটেলের সেরা কর্মীর পুরস্কার প্রাপ্ত সনজয় কুমারকে। তিনি নিম্নমান সহকারী (কার্য সহকারী) হিসেবে পর্যটন মোটেল, রাজশাহীতে কর্মরত।
ভুক্তভোগী সনজয় জানান, বাংলাদেশ পর্যটন করর্পোরেশন নিয়োগ পেয়ে ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে রাজশাহীতে কার্য-সহকারী হিসেবে নিম্নমান সহকারী পদে কাজে যোগ দেন। এ পদে যোগদানের পর থেকে তিনি প্রশাসন শাখার পাশাপাশি বিভিন্ন সময় স্টোর অভ্যর্থনাকারী বেলবয়সহ কক্ষ সুপারিভিশনের দায়িত্ব প্রদান করেন। নিষ্ঠার সহিত দায়িত্ব পালনের জন্য তাকে পর্যটন মোটেল রাজশাহীর সেরা কর্মী হিসেবে পুরস্কৃতও করা হয়। এছাড়াও রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর রাজশাহী সফরের সময় খাবার প্রস্তুত ও পরিবেশনের দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন তিনি। কিন্তু করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরুর প্রেক্ষিতে পর্যটন করপোরেশনের প্রধান কার্যালয়ের বাণিজ্যিক শাখা গত ২৩ মার্চের এক আদেশে নিরাপত্তা, ক্লিনিং, অত্যাবশ্যকীয় কাজে সম্পৃক্ত ছাড়া অন্যান্যদের বিনা বেতনে ছুটিতে পাঠাতে বলে। যার প্রেক্ষিতে সনজয়কে ৩১ মার্চ পর্যন্ত বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হয়। পরে যোগাযোগ করে ডিউটিতে যেতে বলা হয়। এ জন্য তিনি প্রশাসনিক কর্মকর্তার সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করলে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটি শেষে তাকে ডিউটিতে যেতে বলেন। সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটি শেষে তিনি নির্ধারিত ডিউটিতে যোগ দিতে গত ৩১ মে ইউনিট ব্যবস্থাপক রাজশাহীর কাছে রিপোর্ট করেন। কিন্তু তিনি কাজে যোগ দিতে দেন নি। তাকে বলা হয়েছে, ফোন করে পর্যায়ক্রমে ডাকা হবে।
উল্লেখ্য, পর্যটন মোটেল রাজশাহী ইউনিটে দৈনিক মজুরী ভিত্তিক মোট ২৫ জন কার্যসহকারী আছেন। এদের মধ্যে ১৪ জন কার্যসহকারীর প্রধান কার্যালয় হতে ইস্যুকৃত নিয়োগপত্র রয়েছে। বাকি ১১ জন কার্যসহকারীর কোন নিয়োগপত্র নেই। এই পদে বর্তমানে তিনজন নিম্নমান সহকারী নিয়োজিত আছেন, যাদের কারও কোনো নিয়োগপত্র নেই। তাদের মধ্যে ম্যনেজার মোতাহার হেসেনের ভাগনে সাদ্দাম হোসেনও রয়েছে। পর্যটন মোটেল রাজশাহী ইউনিটে ১১ জন দৈনিক মজুরীভিত্তিক সকল কর্মীকে ডিউটিতে বহাল রাখা হইয়াছে। তাদের বেতন ভাতাও অব্যাহত আছে। এছাড়াও যে সকল কর্মীকে ছুটি দেয়া হয়েছিল শুধুমাত্র সনজয় ছাড়া সবাইকে যথারীতি ডিউটিতে বহাল করা হয়েছে। তিনি গত পাঁচ মাস ধরে বিনা বেতনে ছুটিতে রয়েছে। তিনিই দরিদ্র পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তিনি পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। তার স্ত্রী গর্ভবতী অর্থের অভাবে ডাক্তার দেখাতে পারছেন না। বিভিন্ন সময়ে ম্যনেজার ও ঢাকা অফিসে যোগাযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না।
এই বিষয়ে পর্যটন মোটেল রাজশাহীর ইউনিট ম্যানেজার মোতাহার হোসেন বলেন প্রধান কার্যালয়ের নির্দেশ পেলেই তাকে যোগদান করতে দেয়া হবে। অন্যান্যদের ক্ষেত্রে কেন হেড অফিসের নির্দেশ প্রয়োজন হয়নি। এই প্রশ্নের কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি ম্যানেজার মোতাহার হোসেন।